আসসালামু আলাইকুম বন্ধুরা, আজকে আমি আপনাদের সাথে আলোচনা করব, একজন শিক্ষককে যখন বিদায় দেওয়া তখন যেসব বক্তব্য দেওয়া হয় তার নমুনা বক্তব্য কেমন হয়।
বিদায় শব্দটার মধ্যে মুহুর্তেই সামনে ফুটে ওঠে হৃদয়ের ব্যাকুলতা, মনের আকুতি। আনমনা হ’য় সহজেই। বুকের ভেতরটা কেমন জানি ধস করে ওঠে, যেমন করে প্রিয়জন বিয়োগের বেলায় ঘটে। খুব ভালোবাসার জন হলে তা হয় আরো বিষাদময়।
যদিও সকল বিদায় একই রকম নয়।
কিছু বিদায় চিরজীবনের জন্য।
কিছু আবার ক্ষনিকের বিদায়।
দুটোই কমবশী দুঃখজনক।
একঝাঁক নক্ষত্রের একদিন ধুমকেতুর মতো আবির্ভাব হয়েছিল।
তারা আজ চোখের অন্তরালে অনেক দুরে চলে যাবে।
জানি এভাবে আর দেখা হবেনা।
নক্ষত্র পতন হয় আমরা জানি। যে তারার আলো আজ আমরা দেখছি সেটা অনেক আগের আলো।
আর এই রকমই সকল নক্ষত্রকে আমরা আজ দুরে সরে যেতে দেখবো।
এটাই প্রকৃতির নিয়ম।
এক প্রস্থান নেবে তবেই নতুনের আগমন ঘটবে।
যাদেরকে নিয়ে এত উল্লাস, আনন্দ, দুঃখ, বেদনার মাঝেও ভালো ছিলাম।
তাদেরকে আজ দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয়ে সময়ের শাসন মেনে বিদায় জানাতে হচ্ছে।
তাদেরকে আমরা সেইভাবে একই অঙ্গনে আর দেখবো না।
হয়তো কোনো একদিন কোনো চৌরাস্তার মোড়ে ব্যাস্ততার মাঝে মোলাকাত হবে।
বেশী কথা আর হবেনা।
ক্ষনিকের মুহুর্তে যা হয় সেটাই।
হঠাৎ করেই আপন কাজে ব্যস্ত হয়ে
হারিয়ে যাবো,
তখন পূর্বের কথা স্মরণ করে একটু বিষন্নতা আসবে এটা সত্যি।
তবুও একটা কথা বলবো তোমরা যেখানেই থাকো ভালো থাকো। যেখানেই যাও না কেন তোমাদের সুগন্ধি সারা বাগান ভরিয়ে তুলবে – এ আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস।
আরও দেখুন: SSC বিদায় অনুষ্ঠানের বক্তব্য (শিক্ষার্থী ও শিক্ষক উভয়ের জন্য)
বিদায় অনুষ্ঠানের নমুনা বক্তব্য
ক্ষমা করো, ধৈর্য ধরো হউক সুন্দরতর বিদায়ের ক্ষণ।
মৃত্যু নয় ধ্বংস নয়, নহে বিচ্ছেদের ভয়।
শুধু সমাপন।
আজকের বিদায়ী অনুষ্ঠানে উপস্থিত মাননীয় প্রধান শিক্ষক, আমার সহকর্মী শিক্ষক শিক্ষিকাবৃন্দ সবার প্রতি জানাই আন্তরিক শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।
এবং মঞ্চের সম্মুখে উপবিষ্ট আমার প্রিয় শিক্ষার্থীদের জানাই আমার হৃদয়ের অন্তস্থলের শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা।
বিদায় মানে যেনো বিচ্ছেদের এক কবিতা, যে কবিতা হৃদয়কে দুঃখ ভারাক্রান্ত করে, দু’চোখ হয় অশ্রুসজল। আজ তোমাদের বিদায় বেলা। বিদায়ের অনুষ্ঠান। এই বিদায় কেবল ক্ষণিকের আজীবনের জন্য নয়।
হৃদয়ের স্মৃতিপটে তোমরা আমাদের হৃদয়ে থেকে যাবে। এই বিদায় আরো সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার, নিজের অমিত সম্ভাবনা মেলে ধরার, নিজের যোগ্যতা, মেধা ও পরিশ্রম দিয়ে নিজের জীবন গড়ার পদক্ষেপ।
এই বিদায় নেওয়াটাও যোগ্যতার। দীর্ঘ সময় ধরে পরিশ্রম করে, পড়াশোনা করে তোমরা একেকটা ধাপ পার হয়ে আজ বিদায়ের ক্ষণে উপস্থিত হয়েছো আরো সামনের দিকে এগিয়ে যাবার জন্য।
বিদ্যালয়ের প্রতিটি মুহূর্তে তোমাদের স্পর্শ লেগে আছে, এই বিদ্যালয়ের প্রাঙ্গন তোমরা ভরিয়ে রেখেছো তোমাদের সরব উপস্থিতির মাধ্যমে, পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক প্রতিভার মাধ্যমে এই বিদ্যালয়কে তোমরা গর্বিত করেছো, সম্মানিত করেছো আমাদের সকলকে।
এই বিদ্যালয় থেকে তোমাদের
শারীরিক বিদায় হলেও বিদ্যালয়ের
অঙ্গন থেকে তোমাদের স্মৃতি
কখনো মুছে যাবে না। এই
জীবনের খেলাঘরে এই বিদায়
যতটা দুঃখের ঠিক ততটাই
আনন্দের কারণ জীবনের অমিত
সম্ভাবনার দিকে তোমরা এগিয়ে
যাবে, মুঠো মুঠো কুড়িয়ে নেবে
জীবনে সাফল্য সুধা।
জীবনের নানান অভিজ্ঞতা তোমাদের জীবনকে বৈচিত্র্যময় করবে। তাই বলি এগিয়ে যেতে হলে মাঝে মাঝে ছেড়ে যেতে হয়, কাটাতে হয় মায়ার ইন্দ্রজাল।
তাই হযরত আলী (রাঃ) একটা বিখ্যাত উক্তি সবসময় মনে রাখবে, জীবন হোক কর্মময়, নিরন্তর ছুটে চলা, ঘুমানোর জন্যতো কবর পরেই রয়েছে।
তোমাদের জীবনকে এমনিভাবে তোমরা সাজাবে যেনো জীবনের প্রতিটি আনন্দ তোমরা উপভোগ করতে পারো।
আলসেমি করে কেউ কখনো বড় কিছু হতে পারে নি।
যারা নিজের কমফোর্ট জোন ভেঙে পরিশ্রম করেছে তারাই স্পর্শ করেছে সাফল্যের চুড়া। তারাই অর্জন করেছে সম্মান ও খ্যাতি। কখনো বলবে না আমারতো মেধা নেই, আমিতো ব্রিলিয়ান্ট নই, মেধার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে পরিশ্রম।
তুমি যত জানবে, যত পড়বে, যত অভিজ্ঞতা অর্জন করবে তোমার এগিয়ে যাওয়া কেউ রোধ করতে পারবে না।
বিগত কয়েকবছর ধরে তোমাদেরকে আমাদের আন্তরিকতা ও ভালোবাসা অর্পণ করেছি। প্রয়োজনে কঠোর আচরণ করেছি যাতে তোমরা নিজেদের পড়াশোনা নিয়ে সিরিয়াস হও। যেনো পরীক্ষায় ভালো সাফল্য অর্জন করতে পারো।
এই বিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণ তোমাদের কখনোই ভুলবে না। আকাশে উজ্জ্বল নক্ষত্রের মতো, বাগানের ফুটে থাকা ফুলের সৌন্দর্যের মতো আমরা আমাদের হৃদয়ে অমলিন হয়ে থাকবে।
তোমাদের এই বিদায় শুভ হোক।
তোমরা নিয়ম শৃঙ্খলা মেনে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করো।
এই সময়টা খুবই স্পর্শকাতর।
একেবারেই সময় নষ্ট করা যাবে না। ফেসবুক, ইউটিউব এসব তোমার মনযোগ নষ্ট করবে, এসবের কপাট বন্ধ করে দাও। অতিরিক্ত রাত জাগা যাবে না।
সময়ের সর্বোচ্চ ব্যবহার করতে হবে।
কারণ এই সময়টা আর কখনোই ফিরে পাবে না। কথায় আছে সময় গেলে সাধন হবে না। জীবনে অনেক কিছুই করতে পারবে কিন্তু পড়াশোনা গুরুত্বটা সঠিক সময়ে দিতে হবে।
যারা পড়াশোনা না করে গুরুত্ব না দিয়ে অবহেলা করেছে তারা অনেকে পদে পদে কষ্ট পাচ্ছে।
তাই কখনো পড়াশোনাকে অবহেলা করবে না। জীবন বড় কঠিন।
তোমরা শিক্ষকের কথা মেনে চলো, বাবা মার কথা মেনে চলো, তোমাকে নিয়ে তাদের স্বপ্ন পূরণ করো।
বিদ্যালয়ের মুখ উজ্জ্বল হলো এবং সর্বোপরি তোমাদের নিজেকে আলোকিত মানুষ করো।
জীবনে সবসময়ই বড় স্বপ্ন দেখবে এবং সেটা অর্জনের জন্য পরিশ্রম করবে দেখবে তোমরা অনেক দূর এগিয়ে গেছো। বিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণে উপস্থিত সকলের প্রতি আমি আবারো আমার শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানাচ্ছি। এবং শিক্ষার্থীদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করে আমার বক্তব্য শেষ করছি।
ইতিহাস কখনো বিদায় বলে না, বলে আবার দেখা হবে। আল্লাহ হাফেজ।
আপনি যদি চাকরির বিভিন্ন টিপস পেতে চান: ভিজিট করুন- BDQNA.Com